ফেসবুকে লাইভ চালিয়েই এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন। আত্মঘাতী মৌসুমী মিস্ত্রির (১৭) বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সোনারপুরে। স্থানীয় একটি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত সে।
রোববার ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার হলেও পরিবারের তরফে সোমবার সোনারপুর থানায় দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার মামলা রুজু করেছে।
অভিযুক্তদের এক জন কামালগাজির একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। অন্য জন গড়িয়ার বাসিন্দা। আগে তিনি মৌসুমীকে ইংরেজি পড়াতেন।
পরিবারের অভিযোগ, তারা আত্মহত্যার ছবি লাইভ দেখেও খবর দেননি।
সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ অবশ্য নিশ্চিত হতে পারেনি ওই ছাত্রী ক্যামেরা চালু রেখে আত্মঘাতী হয়েছে কিনা। ছাত্রীর মোবাইলটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এক পুলিশকর্তা জানান, মোবাইল থেকে একটি ছবি মিলেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই কিশোরী একটি চেয়ারের ওপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কপালের নীচ থেকে পুরো মুখ ওড়না দিয়ে ঢাকা।
পুলিশ জানিয়েছে, মা এবং দিদিমার সঙ্গে সোনারপুর বৈদ্যপাড়ায় থাকত ওই ছাত্রী। কাছেই পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে অন্য বাড়িতে ওই ছাত্রীর সৎ বাবা দীপক মণ্ডল ভাড়া থাকেন।
পরিবার জানিয়েছে, শনিবার এক বান্ধবীর সঙ্গে বেরোয় মৌসুমী। অভিযুক্ত ছাত্রের সঙ্গে দেখা করে সময় কাটায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বাড়ি ফেরে। তারপর থেকে কারও সঙ্গে কথা বলেনি।
তার মা শম্পা আয়ার কাজ করেন। মেয়ে ফেরার পরে তিনি কাজে চলে যান। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ একটি অনুষ্ঠানে যায় মৌসুমী।
সুব্রত মণ্ডল নামে এক আত্মীয়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খেয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় সে। পাশের ঘরে ছিলেন সুব্রত এবং দাদি।
পুলিশ জানিয়েছে, রোববার সাড়ে ১০টা বেজে গেলেও ওই ছাত্রী ঘুম থেকে না ওঠায় ডাকাডাকি করেন বাড়ির লোক। ততক্ষণে ফিরেছেন শম্পাও।
সুব্রত জানান, এর পরই জানালা দিয়ে মৌসুমীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় মরদেহ।
দীপকের অভিযোগ, মৌসুমীর মোবাইলে ফেসবুক চালু ছিল। সেখানে গলায় ওড়না জড়ানো ছবিও আছে। তা কয়েক জন বন্ধু দেখেছে।
হোয়াটসঅ্যাপে অভিযুক্ত ছাত্রের সঙ্গে চ্যাটও মিলেছে। ওই ছাত্র নিজের পাঠানো মেসেজ ডিলিট করে দিলেও মৌসুমীর মেসেজগুলো ছিল।
ভোর ৩ টা নাগাদ ওই ছাত্রকে মৌসুমী শেষ মেসেজ করে হোয়াটসঅ্যাপে। লেখা ছিল, আমাকে শেষ দেখা দেখে নাও। শনিবার ওই ছাত্রের সঙ্গে দেখা করে মৌসুমী।